ইলন মাস্ক এর “উই রোবট” ইভেন্টে বড় চমক

ইলন মাস্ক সম্প্রতি লস অ্যাঞ্জেলেসে টেসলার ‘উই, রোবট‘ ইভেন্টে নতুন এক চমকপ্রদ রোবোভ্যানের প্রোটোটাইপ উন্মোচন করেছেন। এটি হবে সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক ও স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালিত একটি বৃহৎ যানবাহন, যা বাসের মতো বড় এবং উচ্চ ঘনত্বের এলাকায় মানুষ ও পণ্য পরিবহনের জন্য বিশেষভাবে তৈরি। রোবোভ্যান একসাথে ২০ জন পর্যন্ত যাত্রী বহন করতে সক্ষম হবে এবং একইসাথে পণ্য পরিবহনেরও সুযোগ থাকবে বলে জানিয়েছেন মাস্ক।

ইভেন্টে মাস্ক জানান, “আমরা এটি তৈরি করবো এবং এটি এমনই দেখতে হবে।” যদিও প্রকৃতপক্ষে এটি কবে তৈরি হবে বা এর খরচ কত হবে, তা নিয়ে মাস্ক বিস্তারিত কিছু বলেননি।

রোবোভ্যানটি দেখতে বেশ আকর্ষণীয়। এর ডিজাইনটি যেন একদিকে ‘দ্য জেটসন্স’ সিরিজের কোনো বাসের মতো, অন্যদিকে ১৯৫০-এর দশকের একটি টোস্টারের মতো। এর রূপালী ধাতব গায়ে কালো লাইন এবং এর চারপাশে মাটি বরাবর আলো দেখা যায়। এর দরজাগুলো মাঝখান থেকে বেরিয়ে আসে, এবং ভিতরে যাত্রীদের বসার পাশাপাশি দাঁড়ানোরও ব্যবস্থা রয়েছে। ভ্যানটি সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় হওয়ায় কোনো স্টিয়ারিং হুইল নেই।

আরো পড়ুনঃ বিশ্বের প্রথম বিলাসবহুল মহাকাশ স্টেশন, দেখতে প্রায় একটি ফাইভ স্টার হোটেলের মতো

মাস্ক ইভেন্টে বলেন, “আমরা চাই ভবিষ্যতের রাস্তা নতুনভাবে দেখতে লাগুক।” টেসলা সাইবারট্রাকের মতোই, রোবোভ্যানও সেই ধারণা অনুযায়ী ডিজাইন করা হয়েছে।

টেসলার রোবোভ্যানের ডিজাইন অন্যান্য স্বয়ংক্রিয় রোবোট্যাক্সি যেমন Zoox এবং Cruise এর মতোই, তবে এটি তুলনামূলকভাবে অনেক বড়। চীনে WeRide নামে একটি কোম্পানি একই ধরনের রোবোবাস তৈরি করেছে। যদিও বৃহস্পতিবারের ইভেন্টে প্রদর্শিত রোবোভ্যানটি শুধুমাত্র একটি প্রোটোটাইপ ছিল, প্রকৃত পণ্যটি কেমন হবে বা কবে এটি বাস্তবে আসবে তা এখনও অনিশ্চিত।

২০২৩ সালের টেসলার ইনভেস্টর ডে-তে রোবোভ্যানের প্রথম ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল, যেখানে দুটি নতুন গাড়ির ডিজাইন দেখানো হয়েছিল। একটি ছোট গাড়ি, যা এখন সাইবারক্যাব নামে পরিচিত, এবং আরেকটি বৃহত্তর যানবাহন, যা সম্ভবত রোবোভ্যান।

টেসলার লক্ষ্যমাত্রা হলো ২০৩০ সালের মধ্যে ২ কোটি গাড়ি উৎপাদন করা। এর জন্য টেসলাকে ২০২২ সালের তুলনায় উৎপাদন ও বিক্রয় প্রায় ১৫ গুণ বাড়াতে হবে। তবে ইভেন্টে মাস্ক রোবোভ্যানের জন্য নতুন উৎপাদন সুবিধা তৈরির বা বিদ্যমান সুবিধাগুলিকে পুনর্গঠনের কোনো পরিকল্পনা প্রকাশ করেননি। এমনকি নির্দিষ্ট কোন সময়সীমার কথাও উল্লেখ করা হয়নি।

মাস্কের বক্তব্য অনুযায়ী, সাইবারক্যাবের উৎপাদন শুরু হবে ২০২৬ বা ২০২৭ সালে, তবে রোবোভ্যানের ব্যাপারে তেমন কিছু বলা হয়নি।

রোবোভ্যান ছাড়াও, মাস্ক টেসলার নতুন সাইবারক্যাব নামের একটি স্বয়ংক্রিয় ট্যাক্সির মডেলও উন্মোচন করেছেন। এটি দুই দরজা বিশিষ্ট, কোনো স্টিয়ারিং হুইল বা প্যাডেল নেই। মাস্ক বলেছেন, এই যানবাহনগুলো মানুষের তুলনায় ১০ গুণ বেশি নিরাপদ হবে এবং এর উৎপাদন খরচ হবে ৩০,০০০ মার্কিন ডলারের নিচে। ২০২৬ সালে এর উৎপাদন শুরু হবে এবং এটি ক্রয়যোগ্য হবে।

রোবোভ্যান এবং সাইবারক্যাবের পাশাপাশি ইভেন্টে টেসলার হিউম্যানয়েড রোবট অপ্টিমাসকেও প্রদর্শন করা হয়। ইভেন্টে এই রোবটটি বিভিন্ন দৈনন্দিন কাজ করতে দেখা গেছে, যেমন প্যাকেজ আনা এবং গাছের পানি দেয়া। মাস্কের মতে, অপ্টিমাস মানুষের জন্য দৈনন্দিন কাজ সহজ করে দেবে এবং একদিন এটি হবে টেসলার সবচেয়ে বড় পণ্য।

টেসলার এই উদ্যোগগুলো ভবিষ্যতের যানবাহন এবং প্রযুক্তির জগতে নতুন এক দিগন্ত উন্মোচন করতে যাচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, টেসলার এই পরিকল্পনাগুলো কবে বাস্তবায়িত হবে এবং কীভাবে এগুলো মানুষের জীবনধারাকে বদলে দেবে।

মার্ক জুকারবার্গের মেটাভার্স নতুন সম্ভাবনার ইঙ্গিত: মেটাভার্স অবশেষে জীবনের চিহ্ন দেখাচ্ছে

Comment

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
instagram Group Join Now

সাম্প্রতিক খবর

.আরো