স্পেসএক্স স্টারশিপ ফ্লাইট ৭ পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের জন্য বিশ্বের বৃহত্তম রকেট তৈরি করছে

স্পেসএক্স এর মহাকাশ যাত্রার আরো একটি নতুন অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে। আগামী ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ সালে, বিশ্বের বৃহত্তম রকেট “স্টারশিপ” এর সপ্তম পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন অনুষ্ঠিত হবে। এই মিশনের মাধ্যমে স্টারশিপ এবং তার সুপার হেভি বুস্টারের উন্নত সংস্করণ পরীক্ষা করা হবে।

সম্প্রতি ১০ জানুয়ারি, ২০২৫ তারিখে স্পেসএক্স সফলভাবে স্টারশিপকে সুপার হেভি বুস্টারের উপরে স্থাপন করেছে। টেক্সাসের বোকা চিকায় অবস্থিত স্পেসএক্সের স্টারবেজ লঞ্চ প্যাড থেকে এটি উৎক্ষেপণ করা হবে। স্টারশিপের উচ্চতা প্রায় ৪০০ ফুট (১২২ মিটার), যা এটিকে বিশ্বের সর্বোচ্চ এবং সবচেয়ে শক্তিশালী উৎক্ষেপণ যান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

আরও পড়ুনঃ নাসার পার্কার সোলার প্রোব সূর্যের বায়ু মন্ডলে প্রবেশ করে ইতিহাস গড়েছে

স্টারশিপ ফ্লাইট ৭ এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি একসঙ্গে অনেকগুলো পরীক্ষা চালাতে সক্ষম । মিশনের সময় স্টারশিপের ফ্লাইট কম্পিউটার, অ্যাভিওনিক্স এবং হিট শিল্ডের উন্নত সংস্করণ পরীক্ষা করা হবে। এছাড়াও, স্টারশিপ প্রথমবারের মতো স্পেসএক্সের স্টারলিংক ইন্টারনেট স্যাটেলাইটগুলোর একটি সেট মহাকাশে মোতায়েন করবে। উড্ডয়নের মোট সময়কাল হবে প্রায় ৬৬ মিনিট।

স্টারশিপের এই সংস্করণে বিশেষ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। স্টারশিপের সামনের ছোট ফ্ল্যাপগুলো হিট শিল্ড থেকে দূরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, যাতে পুনঃপ্রবেশের সময় অতিরিক্ত তাপ থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়। এছাড়াও, সুপার হেভি বুস্টারের ৩৩টি ইঞ্জিনের মধ্যে একটি ইঞ্জিন পুনঃব্যবহার করা হবে, যা স্পেসএক্সের পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্রযুক্তির একটি বড় মাইলফলক।

স্পেসএক্স এই ফ্লাইটে আরও একটি চ্যালেঞ্জিং পরীক্ষা চালাবে। সুপার হেভি বুস্টারকে উড্ডয়নের পর পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এটি স্পেসএক্সের লঞ্চ টাওয়ারের বড় মেটাল চপস্টিক আর্ম দিয়ে ধরা হবে। ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে ফ্লাইট ৫ এ এই পদ্ধতিটি সফলভাবে প্রয়োগ করা হয়েছিল। তবে, ফ্লাইট ৬ এ এটি সফল হয়নি এবং বুস্টারকে মেক্সিকো উপসাগরে নরম ল্যান্ডিং করাতে হয়েছিল।

তবে, ফ্লাইট ৭ এর ক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। স্পেসএক্স জানিয়েছে, সুপার হেভি বুস্টার এবং লঞ্চ টাওয়ার যদি নির্ধারিত মানদণ্ড পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে বুস্টারটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে মেক্সিকো উপসাগরে নরম ল্যান্ডিং করবে। স্পেসএক্সের কর্মকর্তারা বলেছেন, “জনসাধারণ এবং আমাদের দলের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আমরা কোনো আপস করব না। শুধুমাত্র সঠিক শর্তে বুস্টারের পুনরাগমন হবে।”

এই মিশন শুধুমাত্র স্টারশিপের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা যাচাই করার জন্য নয়, বরং ভবিষ্যতের মহাকাশ অভিযানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। স্টারশিপকে নাসার আর্টেমিস ৩ মিশনে ২০২৭ সালে চাঁদে অবতরণের জন্য ব্যবহার করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এছাড়াও, স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ক স্টারশিপের মাধ্যমে ২০২৬ সালের মধ্যে মঙ্গল গ্রহে একটি অযাত্রী মিশন পাঠানোর আশা প্রকাশ করেছেন।

ফ্লাইট ৭ এ স্টারশিপের সফল উড্ডয়ন ও পরীক্ষাগুলো স্পেসএক্সকে মহাকাশ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং পৃথিবীর সীমানা ছাড়িয়ে মানবজাতির ভবিষ্যত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

নাসা এবং আইএসআরও য়ৌথভাবে ২০২৫ সালে লঞ্চ করবে নিসার উপগ্রহ

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
instagram Group Join Now

সাম্প্রতিক খবর

.আরো