দিল্লি পুলিশ এবং বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিপ্টো প্ল্যাটফর্ম বাইনান্সের যৌথ প্রচেষ্টায় সম্প্রতি একটি বড় ক্রিপ্টো স্ক্যাম ধ্বংস করা হয়েছে, যেখানে প্রতারকরা “মি.এস গোল্ডকোট সোলার” নামের একটি ভুয়া কোম্পানি পরিচালনা করছিল। এই স্ক্যামটি ভারতীয় সরকারের শক্তি মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পেয়েছে বলে দাবি করে, দেশের সৌরশক্তি প্রকল্পে বিনিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে বহু মানুষকে প্রতারিত করেছিল। এই অপারেশনে একাধিক ব্যক্তি গ্রেফতার হয়েছে এবং ১০০,০০০ ইউএসডিটি-এর বেশি ক্রিপ্টো সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
প্রতারকরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মাধ্যমে “মি.এস গোল্ডকোট সোলার” কে একটি বৈধ বিনিয়োগ সুযোগ হিসেবে প্রচার করেছিল। তারা উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের ছদ্মবেশ ধারণ করে স্ক্যামের প্রচারণা চালায় এবং ভুয়া রিটার্ন দেখিয়ে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করে। স্ক্যামের পেছনের ব্যক্তিরা ভুয়া প্রমাণ, মিথ্যা আয়ের হিসাব এবং প্রথম দিকের বিনিয়োগকারীদের মুনাফা দেখিয়ে তাদের বৈধতা অর্জনের চেষ্টা করেছিল। ফলস্বরূপ, অনেক বিনিয়োগকারী তাদের টাকা হারিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ক্রিপ্টোকারেন্সি কি? এর বিস্তারিত তথ্য এবং ভবিষ্যৎ
এই প্রতারণার সময়, স্ক্যামাররা একাধিক সিম কার্ড ব্যবহার করে, যা নিরীহ ব্যক্তিদের পরিচয় ব্যবহার করে সক্রিয় করা হয়েছিল। তারা এই ভুয়া সিম কার্ডগুলোকে বৃহৎ পরিমাণে বিতরণ করতো এবং কিছু বিদেশে পাঠাতো। এর ফলে স্ক্যামাররা যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করে নিজেদের পরিচয় গোপন রাখতে সক্ষম হতো। স্ক্যামটি মূলত এমন সিম কার্ডগুলোর উপর নির্ভরশীল ছিল, যা ভুয়া নথির সাহায্যে তৈরি করা হয়েছিল, যাতে প্রতারকরা নিজেরা ধরা না পড়ে। তারা ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে জমা হওয়া অর্থ বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করতো এবং এর কিছু অংশ ক্রিপ্টোকারেন্সিতে রূপান্তর করতো, যা তদন্তকারীদের জন্য আরও চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছিল।
দিল্লি পুলিশ তদন্তে বাইনান্সের সহায়তা চায় এবং এই অপারেশনের সময় তাদের সাথে বেশ কয়েকটি ভার্চুয়াল মিটিংয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়। এই মিটিংগুলোর মাধ্যমে বাইনান্স তদন্তে আর্থিক বিশ্লেষণমূলক সহায়তা প্রদান করে এবং অর্থের পথ অনুসরণ করতে সাহায্য করে। বাইনান্সের আইন প্রয়োগ বিভাগের প্রধান প্রশিক্ষক জ্যারেক জাকুবচেক বলেন, “বাইনান্স বিভিন্ন দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সাথে তথ্য শেয়ারিং সেশন পরিচালনা করছে এবং এই মামলাটি প্রমাণ করে যে এই সহযোগিতার মাধ্যমে কতটা ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যায়।” বাইনান্স কর্তৃপক্ষ উল্লেখ করেছে যে তারা ভবিষ্যতেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আর্থিক তদন্তে সহায়তা করার জন্য প্রস্তুত থাকবে।
এই যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে দিল্লি পুলিশ এবং বাইনান্স একসঙ্গে কাজ করে প্রতারকদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তাদের সহায়তায় ১০০,০০০ ইউএসডিটির বেশি ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এই কেসটি প্রমাণ করে যে, সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতায় সফলভাবে প্রতারণার মতো জটিল বিষয়গুলো তদন্ত করা সম্ভব।