ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান যুদ্ধে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার নতুন দিগন্ত খুলেছে। যুদ্ধক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রযুক্তির অবদান উল্লেখযোগ্য, কিন্তু ড্রোন প্রযুক্তি নিয়ে ন্যাটোর আগ্রহ বিশেষভাবে আলোচিত হচ্ছে। সম্প্রতি, ন্যাটো এমন ড্রোন প্রযুক্তি অন্বেষণ করছে যা এই যুদ্ধে একপ্রকার ‘প্যান্ডোরার বাক্স’ খুলেছে, নতুন ও বিপজ্জনক সামরিক কৌশলগুলি সামনে এনে দিয়েছে।
ড্রোন প্রযুক্তি ইতোমধ্যে বিভিন্ন যুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছে, কিন্তু ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ এই প্রযুক্তির ব্যবহারকে নতুন পর্যায়ে নিয়ে গেছে। ন্যাটো, সামরিক শক্তির দিক থেকে বিশ্বে সবচেয়ে ক্ষমতাধর জোট, নতুন ড্রোন প্রযুক্তি নিয়ে আরও গভীর গবেষণা ও উন্নয়ন করছে। এসব ড্রোন যুদ্ধক্ষেত্রে সরাসরি আক্রমণ, নজরদারি, এবং সাইবার হামলা চালানোর মতো কার্যক্রমে ব্যবহৃত হচ্ছে।
আরো পড়ুন: ১। দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিবে ইলন মাস্ক এর নিউরালিংকের ব্লাইন্ডসাইট ইমপ্ল্যান্ট
২। ওজনহীন ব্যাটারি প্রযুক্তি উদ্ভাবন যা ইলেকট্রিক যানবাহনের রেঞ্জ বাড়াবে ৭০% পর্যন্ত
প্যান্ডোরার বাক্সের অর্থ কী?
‘প্যান্ডোরার বাক্স‘ শব্দটি এখানে প্রতীকী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে, যা বোঝায় যে এই ড্রোন প্রযুক্তি একবার চালু হলে, তা অপরিবর্তনীয় ঝুঁকির সম্ভাবনা তৈরি করে। যুদ্ধক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয় ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে, যা আকাশ থেকে হামলা চালানোর পাশাপাশি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে নিজেদের আক্রমণ কৌশল নির্ধারণ করতে সক্ষম।
ন্যাটোর ড্রোন প্রযুক্তি শুধু সামরিক ক্ষমতা বাড়ায়নি, বরং এর মাধ্যমে নতুন যুদ্ধের কৌশল তৈরি হয়েছে। রাশিয়া ও অন্যান্য দেশের বিরুদ্ধে দ্রুত আক্রমণ এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এর সঙ্গে কিছু গুরুতর ঝুঁকি রয়েছে, যেমন প্রযুক্তির অপব্যবহার বা শত্রু দেশের হাতে ড্রোন নিয়ন্ত্রণের হারানো আশঙ্কা। সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ড্রোন প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ ব্যবহার আরও বিস্তৃত হবে, যা একটি নতুন যুদ্ধক্ষেত্র তৈরি করতে পারে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ চলাকালীন ন্যাটোর এই প্রযুক্তিগত প্রয়াস দেখিয়ে দিয়েছে যে ড্রোন প্রযুক্তি আগামী দিনের যুদ্ধে কতটা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। বিভিন্ন প্রকার ড্রোনের ব্যবহার, যেমন কৌশলগত আক্রমণ ড্রোন, নজরদারি ড্রোন, এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর ড্রোন, এই প্রযুক্তির প্রতি নির্ভরতা বাড়াচ্ছে। সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী দিনের যুদ্ধে ড্রোন হবে একটি প্রধান চালক শক্তি।
ন্যাটো দ্বারা নতুন ড্রোন প্রযুক্তির অন্বেষণ সামরিক ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা করছে। এটি যুদ্ধের কৌশল পরিবর্তন করে নতুন ঝুঁকি এবং সম্ভাবনার দিক খুলে দিয়েছে। তবে, এই প্রযুক্তির উন্নয়ন ও ব্যবহার করার সময় সকল পক্ষের উচিত দায়িত্বশীলতার সাথে এর সম্ভাব্য ফলাফল সম্পর্কে সতর্ক থাকা।