নিউজিল্যান্ডের বিজ্ঞানীরা প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরে নতুন ‘Ghost Shark’ আবিষ্কার করেছেন

নিউজিল্যান্ডের বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এক বিস্ময়কর আবিষ্কার করেছেন, যেটি নতুন এক প্রজাতির “ঘোস্ট শার্ক” বা Spookfish নামে পরিচিত। এই নতুন প্রজাতির নাম দেওয়া হয়েছে অস্ট্রালেশিয়ান ন্যারোনোজড  Spookfish, যা প্রশান্ত মহাসাগরের গভীর জলরাশিতে বাস করে। বিশেষত, নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণ দ্বীপের কাছে চ্যাথাম রাইজ এলাকায় এই মাছটি আবিষ্কৃত হয়েছে, যা প্রায় ১,০০০ কিলোমিটার দূরে বিস্তৃত একটি অঞ্চল।

Spookfish বা ঘোস্ট শার্কগুলি মূলত সমুদ্রের গভীরে বসবাস করে এবং এদের চোখ কালো ও অতিপ্রাকৃত দেখায়। এদের ত্বক মসৃণ ও হালকা বাদামি রঙের, যা এদেরকে আরও রহস্যময় করে তোলে। এই প্রজাতির মাছগুলি প্রায় ৮,৫০০ ফুট (২,৬০০ মিটার) গভীরতায় শিকার করে, বিশেষ করে ক্রাস্টেশিয়ান জাতীয় প্রাণী খেয়ে জীবনধারণ করে। এদের মুখটি একটি বকের মতো দেখতে এবং এরা মূলত সমুদ্রের তলদেশে সীমাবদ্ধ থাকে।

 

আরো পড়ুন: ১।  দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিবে ইলন মাস্ক এর নিউরালিংকের ব্লাইন্ডসাইট ইমপ্ল্যান্ট

                   ২। ওজনহীন ব্যাটারি প্রযুক্তি উদ্ভাবন যা ইলেকট্রিক যানবাহনের রেঞ্জ বাড়াবে ৭০% পর্যন্ত

                  ৩। ন্যাটোর নতুন ড্রোন প্রযুক্তি: ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধে “Pandora’s box”

 

বিজ্ঞানী ব্রিট ফিনুচি এই নতুন প্রজাতির বৈজ্ঞানিক নামকরণ করেছেন “হারিওটা আভিয়া,” যা তার দাদীর স্মৃতির উদ্দেশ্যে রাখা হয়েছে। তিনি বলেছেন যে এই ধরনের প্রজাতির মাছ গবেষণা করা খুবই কঠিন, কারণ তারা সমুদ্রের অতল গভীরে বসবাস করে এবং এদের বাসস্থান বেশ অজানা। তাই, এদের জীববিদ্যা বা বিপদের অবস্থা সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়। এই কারণে নতুন প্রজাতির আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের জন্য অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ।

নিউজিল্যান্ডের বিজ্ঞানীদের এই নতুন প্রজাতির ঘোস্ট শার্ক বা Spookfishআবিষ্কার গভীর সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রের অজানা দিকগুলোকে আরও উন্মোচন করেছে। এই মাছটি পূর্বে ধারণকৃত একটি সাধারণ প্রজাতির অংশ হিসেবে মনে করা হলেও, গবেষণা দ্বারা দেখা গেছে যে এটি জেনেটিক এবং শারীরিকভাবে ভিন্ন। এদের চোখের গঠন, বকের মতো মুখ এবং মসৃণ ত্বক তাদের এক অদ্ভুত এবং ভীতিজনক চেহারা প্রদান করে। সমুদ্রের তলদেশে থাকায় এদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া খুবই কঠিন, যা এদের গবেষণার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।

এই মাছগুলো মূলত গভীর সমুদ্রের খাদ্যশৃঙ্খলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে কাজ করে, কারণ তারা গভীর জলের ছোট প্রজাতির প্রাণী শিকার করে। এদের বিচরণ এলাকা এবং খাদ্যাভ্যাসের ফলে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন যে এদের আবাসস্থল বা বাস্তুতন্ত্রের অন্য প্রজাতিদের উপরও এদের প্রভাব থাকতে পারে। ঘোস্ট শার্কের অবস্থা ও বেঁচে থাকার কৌশল সম্পর্কে অধিকতর গবেষণা করা হলে সমুদ্রের গভীর বাস্তুতন্ত্রের আরও অজানা তথ্য জানা যাবে।

২০২৪ সালের শীর্ষ ৫টি উদীয়মান প্রযুক্তি যা আপনার নজর কাড়বে

ঘোস্ট শার্কগুলি মূলত কার্টিলেজ দিয়ে তৈরি হাড়ের গঠনের জন্য পরিচিত, যা এদেরকে অন্যান্য মাছের চেয়ে আলাদা করে। যদিও আগে এদেরকে একটি একক বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত প্রজাতি হিসেবে ধরা হতো, তবে গবেষণা দ্বারা দেখা গেছে যে এরা জেনেটিক ও শারীরিকভাবে অন্যান্য প্রজাতি থেকে আলাদা।

এ ধরনের আবিষ্কার যেমন বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের সীমানাকে বাড়ায়, তেমনই নতুন নতুন গবেষণার পথ উন্মোচন করে। এটি ভবিষ্যতে এই ধরনের রহস্যময় প্রজাতির সংরক্ষণ এবং সমুদ্রের গভীরতায় আরও প্রাণীদের খুঁজে বের করার জন্য গবেষকদের উৎসাহিত করতে পারে​।

Comment

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
instagram Group Join Now

সাম্প্রতিক খবর

.আরো