প্যাবল স্মার্টওয়াচ কোম্পানি এ বছরের শেষের দিকে দুটি নতুন স্মার্টওয়াচ বাজারে আনতে যাচ্ছে। নতুন ঘড়িগুলো প্যাবলওএস-এ চলবে, পুরনো প্যাবল ডিভাইসের সমস্ত বৈশিষ্ট্য এতে থাকবে, এবং এটির নির্মাণে ব্যবহার করা হবে ব্যবহৃত প্যাবল যন্ত্রাংশ। প্রথম স্মার্টওয়াচটির নাম কোর ২ ডুও, যা জুলাই মাসে বাজারে আসবে এবং এর দাম হবে প্রায় ১৪৯ ডলার। মিগিকোভস্কির বলেন, “এটি প্যাবল ২-এর মতো, তবে এটি কোর ডিভাইস থেকে তৈরি। আর ‘ডুও’ মানে হচ্ছে নতুন করে ফিরে আসা।”
এই ঘড়িটি দেখতে একেবারে পুরনো প্যাবল ২-এর মতোই। এটি একই ধরনের সাদাকালো ই-পেপার (প্রকৃতপক্ষে ট্রান্সফ্লেকটিভ এলসিডি) ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়েছে এটিতে এবং এর ফ্রেমটিও প্যাবল ২ ও প্যাবল টাইম ২-যদিও কোর ২ ডুও দেখতে পুরনো ঘড়ির মতো, এটি প্রযুক্তিগত দিক থেকে অনেক উন্নত হয়েছে। আগের প্যাবল ২ মাত্র সাত দিন পর্যন্ত চার্জ ধরে রাখতে পারত, কিন্তু কোর ২ ডুও-এর ব্যাটারি ৩০ দিন পর্যন্ত চলবে। এর কারণ হলো আধুনিক ব্লুটুথ চিপগুলোর বেশি কার্যক্ষমতা। আরও একটি বড় পরিবর্তন হলো, এতে একটি স্পিকার যুক্ত করা হয়েছে, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন সহকারীদের সঙ্গে কথা বলার জন্য ব্যবহার করা যাবে।
বছরের শেষে, ডিসেম্বর মাসে, কোর ডিভাইস আরেকটি নতুন স্মার্টওয়াচ বাজারে আনবে, যার নাম কোর টাইম ২। এর দাম হবে প্রায় ২২৫ ডলার। এটি মূলত পুরনো প্যাবল টাইম ২-এর আপডেটেড সংস্করণ। নতুন এই স্মার্টওয়াচের প্রধান আকর্ষণ হলো টাচস্ক্রিন।
মিগিকোভস্কির মতে, তিনি ঘড়ির ডিসপ্লেতে ছোট ছোট তথ্য বা “কমপ্লিকেশন” দেখতে ভালোবাসেন, যেগুলোর মাধ্যমে ব্যবহারকারী সহজেই অ্যাপে প্রবেশ করতে পারেন। তাই তিনি চেয়েছিলেন প্যাবল-এর ঘড়িতে টাচস্ক্রিন যুক্ত করতে। তবে এটি পুরোপুরি মাল্টিটাচ হবে না, বরং শুধু ট্যাপ করার সুবিধা দেবে। অর্থাৎ, প্যাবল-এর ঐতিহ্যবাহী বোতামের পাশাপাশি স্পর্শনির্ভর কিছু নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা যোগ হবে।
কোর টাইম ২-তেও বেশ কয়েকটি আপগ্রেড রয়েছে। এটি আগের তুলনায় বেশি কার্যক্ষম এবং শক্তিশালী চিপ ব্যবহার করবে, যার ফলে স্টেপ ও স্লিপ ট্র্যাকিং আরও উন্নত হবে। এই ঘড়িটিতেও ৩০ দিনের ব্যাটারি ব্যাকআপ থাকবে এবং একটি বিল্ট-ইন স্পিকার থাকবে।
কোর ডিভাইস দ্রুততার সঙ্গে এই দুটি ঘড়ি বাজারে আনতে কাজ করছে। তবে কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। বিশেষ করে, iPhone-এর সঙ্গে প্যাবলওএস চালিত স্মার্টওয়াচ সংযোগ করা আগের চেয়ে বেশি কঠিন হয়ে পড়েছে। মিগিকোভস্কি চান ঘড়িটি থেকে নোটিফিকেশনগুলোর জবাব দেওয়া যাক, কিন্তু বর্তমানে আইওএস-এর সীমাবদ্ধতার কারণে এটি সম্ভব হচ্ছে না। তবে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের ক্ষেত্রে সমস্যা কম। এছাড়া উৎপাদন ও সফটওয়্যার ইন্টিগ্রেশনেও কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ফলে এই স্মার্টওয়াচগুলোর বাজারে আসার সময়সূচি কিছুটা পিছিয়ে যেতে পারে। পাশাপাশি, তিনি আশঙ্কা করছেন আমদানি শুল্ক বাড়তে পারে, যা গ্রাহকদের জন্য দাম বৃদ্ধি করতে পারে। তবে তিনি বলেন, “আমাদের যদি বেশি খরচ করতে হয়, তাহলে দাম কিছুটা বাড়িয়ে দিতে হবে। আমরা নিজেরা সেই বাড়তি খরচ বহন করতে পারব না।”
যদিও মিগিকোভস্কি লক্ষ লক্ষ স্মার্টওয়াচ বিক্রির পরিকল্পনা করছেন না, তবে তিনি প্যাবল প্রেমীদের জন্য কিছু নতুন ডিভাইস তৈরি করতে পেরে আনন্দিত। তার ভাষায়, “আমি এমন কিছু তৈরি করতে চাই যা আমি নিজে ব্যবহার করতে ভালোবাসি।”