২০২৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস চার্জ করার জন্য বাধ্যতামূলকভাবে ইউএসবি টাইপ-সি চার্জিং পোর্ট ব্যবহারের নিয়ম চালু হবে। এই নিয়মের মূল লক্ষ্য হলো ই-বর্জ্য কমানো এবং ব্যবহারকারীদের জন্য ডিভাইস ব্যবহারে সুবিধা আনা। অ্যাপল এবং ইইউ (EU) কয়েক বছর ধরে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করে আসছে। নতুন নিয়ম শুধু চার্জিং পোর্ট নয়, দ্রুত চার্জিং নিয়ম এবং চার্জার আলাদা করার বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত করেছে। এর ফলে গ্যাজেট ব্যবহারে আরও সহজ হবে।
ইউরোপীয় পার্লামেন্ট এবং দেশগুলো ২০২২ সালের জুন মাসে এই চুক্তি করেছিল। অক্টোবর মাসে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন পায়। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে এই নিয়ম কার্যকর করতে কোম্পানিগুলোকে বাধ্য করা হয়েছে। ইউএসবি টাইপ-সি বাধ্যতামূলক এই নিয়মের অধীনে মোবাইল ফোন, ট্যাবলেট, হেডফোন, ডিজিটাল ক্যামেরা, ভিডিওগেম কনসোল, পোর্টেবল স্পিকারসহ অনেক ডিভাইসে ইউএসবি টাইপ-সি চার্জিং পোর্ট রাখতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, প্লেস্টেশন ৫ এই নিয়মের আওতায় পড়ে না কারণ এর চার্জিং ক্ষমতা বেশি, তবে নিন্টেন্ডো সুইচ এই নিয়মের অধীনে থাকবে। আর ল্যাপটপের জন্য ২০২৬ সাল পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ গুগল পিক্সেল ফোনে চালু করেছে বাইপাস চার্জিং ফিচার : জেনে নিন কিভাবে এটি চালু করবেন
তবে, কিছু ডিভাইস এই তালিকার বাইরে রয়েছে। যেমন, ড্রোনের মতো পণ্য এই নিয়মের আওতায় পড়বে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। ইইউ বলেছে তারা বাজারের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবে এবং প্রয়োজনে নতুন নিয়ম আনবে। অ্যাপলের প্রস্তুতি অ্যাপল এতদিন তাদের নিজস্ব লাইটনিং পোর্ট ব্যবহার করত। কিন্তু নতুন নিয়ম মেনে তারা ইউএসবি টাইপ-সি পোর্ট যুক্ত করতে শুরু করেছে। ম্যাকবুক এবং নতুন আইফোনে ইতিমধ্যে ইউএসবি টাইপ-সি পোর্ট রয়েছে।
যেসব ডিভাইসে ইউএসবি টাইপ-সি পোর্ট থাকবে না, সেগুলো ইইউতে বিক্রি করা যাবে না। তবে কিছু পুরনো মডেল যেগুলো নিয়ম কার্যকর হওয়ার আগে বাজারে এসেছে, সেগুলো বিক্রি করা যাবে। নতুন স্টক আনতে হলে নিয়ম মেনে চলতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন দ্রুত চার্জিং প্রযুক্তি সহজ করার জন্য নতুন নিয়ম চালু করেছে। ইউএসবি পাওয়ার ডেলিভারি (পিডি) ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর ফলে যেকোনো ইউএসবি টাইপ-সি চার্জার দিয়ে দ্রুত চার্জ করা যাবে।
নতুন নিয়মে চার্জার আলাদাভাবে বিক্রির কথা বলা হয়েছে। এর ফলে গ্রাহকরা নিজের পছন্দমতো চার্জার কিনতে পারবেন যার ফলে ই-বর্জ্য কমবে। এই নিয়মগুলো করার প্রধান যে কারণ সেগুলো হচ্ছে-
১। ব্যবহারকারীরা যেকোনো চার্জার ব্যবহার করতে পারবেন।
২। এই নিয়মের ফলে ই-বর্জ্য কমবে।
৩। ভোক্তারা পছন্দমতো চার্জার বেছে নিতে পারবেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই পদক্ষেপ ব্যবহারকারীদের জন্য ডিভাইস ব্যবহারে সহজতা আনার পাশাপাশি পরিবেশ সুরক্ষায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। ই-বর্জ্য কমানোর মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষা করার এই প্রচেষ্টা ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই নিয়ম বাস্তবায়নের ফলে বাজারে ভোক্তাদের সুবিধা বাড়বে, এবং তাদের ব্যয় কমবে। একই সঙ্গে, ডিভাইস নির্মাতাদের নতুন উদ্ভাবনে উৎসাহিত করবে। যদিও কিছু ক্ষেত্রে এই নিয়ম নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এটি সমাধানের জন্য ভবিষ্যতে আরও উদ্যোগ নেবে। দীর্ঘমেয়াদে, এই পদক্ষেপটি প্রযুক্তি শিল্প এবং পরিবেশ উভয়ের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।
ওয়ারলেস চার্জার প্রযুক্তি কিভাবে কাজ করে? জানুন কি কেন ও কিভাবে ?