অ্যান্ড্রয়েড এর নতুন সিকিউরিটি আপডেট নিয়ে ব্যবহারকারীদের অসন্তুষ্ট

গুগল সম্প্রতি অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের জন্য একটি নতুন সেবা চালু করেছে, যার নাম Android System SafetyCore। এই সেবাটি অ্যান্ড্রয়েড ৯ এবং পরবর্তী সংস্করণগুলোর জন্য চালু করা হয়েছে। এই সিস্টেমটি ব্যবহারকারীদের ছবি স্ক্যান করে সম্ভাব্য সংবেদনশীল বিষয়বস্তু শনাক্ত করতে পারে। তবে, গুগল এই পরিষেবা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ না করায় অনেক ব্যবহারকারী অসন্তুষ্ট।

গুগল ৫ অক্টোবর, ২০২৪-এ একটি সিকিউরিটি আপডেট প্রকাশ করে, যেখানে সাধারণ নিরাপত্তা সংশোধনের পাশাপাশি নতুন একটি সিস্টেম সার্ভিস, SafetyCore, যুক্ত করা হয়। গুগল বলেছে, এটি একটি “প্রাইভেসি-সংরক্ষণকারী অন-ডিভাইস সুরক্ষা অবকাঠামো,” যা অ্যাপগুলোর জন্য নিরাপত্তা প্রদান করে।

প্রথমে এটি ব্যবহারকারীদের জন্য খুব একটা স্পষ্ট ছিল না। পরে, গুগল মেসেজেস-এর নতুন নিরাপত্তা ফিচারের তালিকায় এর কার্যকারিতা সম্পর্কে কিছু তথ্য প্রকাশ করে। এই ফিচারটি “Sensitive Content Warnings” নামে পরিচিত, যা আপত্তিকর ছবি শনাক্ত করে ব্লার করে দিতে পারে এবং ব্যবহারকারীদের সতর্ক করে। এটিতে ছবি ফরোয়ার্ড বা পাঠানোর আগেও ব্যবহারকারীদের সচেতন করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

গুগল জানিয়েছে, এই পরিষেবা সম্পূর্ণরূপে অন-ডিভাইস চলে এবং কোনো ডেটা বাহ্যিক সার্ভারে পাঠায় না। তবে, অনেক ব্যবহারকারী এটিকে সন্দেহের চোখে দেখছেন। প্রথমত, গুগল এই পরিষেবাটি ব্যবহারকারীদের অনুমতি ছাড়াই ইনস্টল করেছে, যা অনেকের কাছে স্বচ্ছতার অভাব বলে মনে হয়েছে। দ্বিতীয়ত, এটি ডিভাইসে নীরবে কাজ করে এবং স্বাভাবিক অ্যাপ তালিকায় সহজে দৃশ্যমান হয় না। সেটিংস-এর গভীরে গিয়ে “Show system processes” অপশনে প্রবেশ করলে এটি খুঁজে পাওয়া যায়।

অনেক ব্যবহারকারী অভিযোগ করেছেন যে, এই পরিষেবাটি তাদের অনুমতি ছাড়াই ডিভাইসে ইনস্টল হয়েছে, এবং এমনকি মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেও ইনস্টল হয়েছে, যদিও তাদের সেটিংস শুধুমাত্র ওয়াই-ফাইয়ের মাধ্যমে ডাউনলোডের অনুমোদিত ছিল।

যদি আপনি SafetyCore ব্যবহার করতে না চান, তাহলে এটি বন্ধ বা আনইনস্টল করার কয়েকটি উপায় রয়েছে:

১. আপনার ডিভাইসের Settings অ্যাপে যান।

২. “Apps” অথবা “Apps & Notifications” এ যান।

৩. “See all apps” অপশনে ক্লিক করে উপরের ডানদিকের মেনু থেকে “Show system apps” নির্বাচন করুন।

৪. তালিকা থেকে “SafetyCore” অনুসন্ধান করুন।

৫. যদি “Uninstall” অপশন থাকে, তাহলে সেটি নির্বাচন করুন। যদি তা না থাকে, তাহলে “Disable” অপশনটি বেছে নিন।

৬. যদি আনইনস্টল করা সম্ভব না হয়, তাহলে অন্তত এটি যে অনুমতিগুলো ব্যবহার করে, সেগুলো সীমিত করুন। বিশেষ করে, ইন্টারনেট সংযোগের অনুমতি বন্ধ করা উচিত।

কিছু ব্যবহারকারী জানিয়েছেন যে, এটি সিস্টেম আপডেট বা গুগল প্লে সার্ভিসেস-এর মাধ্যমে আবার ইনস্টল করা হয়েছে। SafetyCore-এর সবচেয়ে বিতর্কিত দিক হলো, এটি ব্যবহারকারীদের কাছে অজান্তে ইনস্টল হয়েছে এবং স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়নি। যদিও গুগল দাবি করেছে এটি কেবলমাত্র ব্যবহারকারীদের সুরক্ষার জন্য, তবুও অনেকেই এটিকে সন্দেহের চোখে দেখছেন।

অন্যদিকে, অ্যাপলও তাদের ডিভাইসের জন্য Communication Safety নামে অনুরূপ একটি ফিচার চালু করেছে। তবে, অ্যাপল ব্যবহারকারীদের কাছে এটি সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য দিয়েছে এবং ব্যবহারকারীদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ রেখেছে।

SafetyCore-এর উদ্দেশ্য ভালো হলেও, গোপনীয়তার প্রশ্নে এটি বিতর্কিত হয়ে উঠেছে। ব্যবহারকারীদের সুরক্ষার জন্য কোনো পরিষেবা চালু করার আগে গুগলের উচিত ছিল পরিষ্কারভাবে ব্যবহারকারীদের জানানো এবং তাদের অনুমতি চাওয়া। যারা এটি পছন্দ করেন না, তারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে এটি নিষ্ক্রিয় করতে পারেন। তবে এটি পরবর্ততে আবার ইনস্টল হতে পারে, যা ব্যবহারকারীদের জন্য বড় উদ্বেগের বিষয়।

হারমনি ওএস নেক্সট- কি সত্যিই অ্যান্ড্রয়েড এর একটি প্রকৃত বিকল্প হতে পারে?

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
instagram Group Join Now

সাম্প্রতিক খবর

.আরো