মাইক্রোসফটের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত এবং উইন্ডোজ ১১-এ আপগ্রেড সংক্রান্ত সমস্যা বর্তমানে একটি বড় আলোচনার বিষয়। অক্টোবর ২০২৫ সালে উইন্ডোজ ১০ এর নিরাপত্তা আপডেট বন্ধ হয়ে যাবে, যা লক্ষ লক্ষ ব্যবহারকারীর জন্য একটি বড় ঝুঁকি হয়ে উঠতে পারে। মাইক্রোসফট ব্যবহারকারীদের বিনামূল্যে উইন্ডোজ ১১-এ আপগ্রেড করার সুযোগ দিয়েছে, তবে এর জন্য নির্দিষ্ট হার্ডওয়্যার প্রয়োজন।
গত কয়েক মাসে উইন্ডোজ ১০ ব্যবহারকারীদের আপগ্রেড হার কমে গিয়েছিল, তবে জানুয়ারি মাসে হঠাৎ ৪ কোটি ব্যবহারকারী উইন্ডোজ ১১-তে আপগ্রেড করেছেন। এটি নির্দেশ করে যে, ব্যবহারকারীরা মাইক্রোসফটের সতর্কতা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে সচেতন হচ্ছেন।
উইন্ডোজ ১০ ব্যবহারকারীদের জন্য দুটি বিকল্প রয়েছে: প্রথমত, তারা যদি সামঞ্জস্যপূর্ণ পিসি ব্যবহার করেন, তবে বিনামূল্যে উইন্ডোজ ১১-তে আপগ্রেড করতে পারেন। দ্বিতীয়ত, তারা মাইক্রোসফটকে এককালীন ৩০ ডলার প্রদান করে আরও এক বছর পর্যন্ত উইন্ডোজ ১০-এর নিরাপত্তা আপডেট পেতে পারেন। তবে এটি সাময়িক সমাধান মাত্র।
একটি বিতর্কিত বিষয় হলো, মাইক্রোসফটের একটি ব্লগ পোস্ট যেখানে বলা হয়েছিল যে, উইন্ডোজ ১১-তে বিনামূল্যে আপগ্রেড করার সুযোগ সীমিত সময়ের জন্য থাকবে। যদিও সেই পোস্ট পরে মুছে ফেলা হয়, এটি ব্যবহারকারীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছিল এবং এর ফলে অনেকেই দ্রুত আপগ্রেড করেছেন।
বর্তমানে উইন্ডোজ ১১-এর আপগ্রেড হার বৃদ্ধি পেলেও, এখনো প্রায় ৫০ কোটি ব্যবহারকারী উইন্ডোজ ১০ ব্যবহার করছেন। এর মধ্যে অনেকেই হার্ডওয়্যার সীমাবদ্ধতার কারণে আপগ্রেড করতে পারছেন না। মাইক্রোসফট যদি আগামী কয়েক মাসে প্রতি মাসে ৪ কোটি ব্যবহারকারীকে আপগ্রেড করতেও সক্ষম হয়, তবুও নিরাপত্তাহীন অবস্থায় বিপুলসংখ্যক ব্যবহারকারী থেকে যাবে।
মাইক্রোসফট ২০২৫ সালকে “উইন্ডোজ ১১ পিসি রিফ্রেশ ইয়ার” হিসেবে ঘোষণা করেছে, যেখানে Copilot AI-সক্ষম পিসির প্রচার চালানো হবে। তবে এটি সকল ব্যবহারকারীর সমস্যা সমাধান করবে না। বিশেষ করে, যাদের পুরনো হার্ডওয়্যার আছে, তারা নতুন পিসি না কিনলে উইন্ডোজ ১১-তে আপগ্রেড করতে পারবেন না।
এই পরিস্থিতির কারণে মাইক্রোসফটকে কিছু নতুন সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। সম্ভাব্য বিকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে: ১. সামঞ্জস্যপূর্ণ পিসিগুলোর জন্য বাধ্যতামূলক আপগ্রেড চালু করা। ২. কম শক্তিশালী পিসিগুলোর জন্য “আপগ্রেড লাইট” সংস্করণ চালু করা। ৩. উইন্ডোজ ১০-এর নিরাপত্তা আপডেটের সময়সীমা আরও এক বা দুই বছর বাড়ানো।
মাইক্রোসফট এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো ঘোষণা দেয়নি। তবে এটি স্পষ্ট যে, উইন্ডোজ ১০-এর সমর্থন বন্ধ হয়ে গেলে লক্ষ লক্ষ ব্যবহারকারী নিরাপত্তার ঝুঁকিতে পড়বেন। বর্তমান সময়ে সাইবার হুমকি বেড়ে চলেছে, এবং নিরাপত্তাহীন কম্পিউটার হ্যাকারদের সহজ লক্ষ্য হতে পারে।
যে ব্যবহারকারীরা এখনো উইন্ডোজ ১১-তে আপগ্রেড করেননি, তাদের জন্য পরামর্শ হলো:
- যদি পিসি সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, তাহলে অবিলম্বে উইন্ডোজ ১১-তে আপগ্রেড করা।
- যদি আপগ্রেড সম্ভব না হয়, তবে অতিরিক্ত নিরাপত্তা সফটওয়্যার ব্যবহার করা এবং গুরুত্বপূর্ণ ফাইলগুলোর ব্যাকআপ রাখা।
- মাইক্রোসফটের পরবর্তী ঘোষণা এবং সিদ্ধান্ত সম্পর্কে সচেতন থাকা।
এই পরিস্থিতি কেবল মাইক্রোসফটের জন্য নয়, বরং ব্যবহারকারীদের জন্যও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সামনের মাসগুলোতে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সেটাই দেখার বিষয়।
মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ১১-এ নতুন একটি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছে